ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত যে ৬টি সমস্যা আপনার মাথা ব্যথার কারণ!

Table of Contents

২০১৮ সালের এই ডিজিটাল যুগে এসে যে বিষয়টি যেকোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা হলো- নিজস্ব একটা ওয়েবসাইট তৈরি করা। ওয়েবসাইট হচ্ছে অনলাইনে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের রিপ্রেজেন্টেটিভ। আপনি যে পণ্য বা সেবারই বিজনেস করেন না কেন, তার ক্রেতা অবশ্যই আছে এবং তারা আপনাকে খুঁজছে। তারা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনার বিজনেস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানবে এবং পছন্দ হলে আপনার ক্লায়েন্ট এ পরিণত হবে। তাই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর সময় হতে হবে সাবধানী।

উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে ওয়েবসাইট নেই এমন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুব কমই পাওয়া যাবে। যার একটা মুদির দোকান আছে, সেও একটা ওয়েবসাইট খুলে বসেছে। আমাদের দেশও এই ক্ষেত্রে এখন আর পিছিয়ে নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে- আমাদের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানগুলো মান্ধাতা আমলের টেকনোলোজি ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানিয়ে রেখেছে যা ভিজিটরদের আকর্ষিত তো করেই না, বরং তাদের বিরক্তির কারণ হয়। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট প্রযুক্তি এখন অনেকখানি এগিয়ে গেছে। সর্বত্র এখন হাইলি অ্যাট্রাকটিভ, ইন্টার অ্যাকটিভ ও ডাইনামিক ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের ওয়েবসাইটগুলো ভুল পদ্ধতিতে, ভুল প্লাটফর্মে বানানো হচ্ছে। এসব সাইটের ডিজাইন ভালো হয় না, ডিভাইস রেসপনসিভ হয়না, নানা রকম বাগ থাকে। এ সমস্ত সমস্যার কারণে ওয়েবসাইট থেকে যে সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল, আমরা তা পাচ্ছি না!

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত ৬টি গুরুতর সমস্যা

আপনি যদি একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক হন, আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে, অথবা যদি আপনি ভবিষ্যতে ওয়েবসাইট বানাতে আগ্রহী হন, তাহলে কিছু দরকারি বিষয় সম্পর্কে আপনার সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক। চলুন জেনে নেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কোন ৬টি সমস্যায় যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে পড়তে হয়ঃ

১. নন-রেসপনসিভ ডিজাইন

অধিকাংশ ওয়েবসাইটগুলোতে যে সমস্যা বিদ্যমান, তা হচ্ছে- নন-রেসপনসিভ ডিজাইন। অর্থাৎ, ওয়েবসাইটটি মোবাইল কিংবা ট্যাব থেকে ব্রাউজ করলে ঠিক মত দেখায় না, ভেঙে যায় অথবা ডিভাইসে ঠিক মতো লোডই হয় না। এই বিষয়টিকে আজ থেকে ৩-৪ বছর আগেও খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হত না। এর কারণ- একটা ওয়েবসাইটে ম্যাক্সিমাম ভিজিটর পিসি থেকে ব্রাউজ করতো। মোবাইল থেকে ওয়েবসাইটে ভিজিট এর সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। ফলে ওয়েবসাইট ডিজাইন করার সময় ডেভেলপাররা “মোবাইল থেকে ভিজিট করতে কেমন লাগবে” এটা চিন্তাও করতে করতেন না।

কিন্তু গত তিন চার বছরে এই চিন্তা ধারায় এসেছে পরিবর্তন। মানুষের হাতে হাতে এখন স্মার্ট ফোন। সবাই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে। ফলে একটা ওয়েবসাইটের ৭০-৮০ ভাগ ভিজিটর মোবাইল থেকেই ভিজিট করে। এখন আপনি যদি এই ৮০ ভাগ লোকের ব্রাউজিং এক্সপেরিয়েন্স এর কথা না ভেবে ২০ ভাগের এক্সপেরিয়েন্স এর কথা ভাবেন, তাহলে চলবে?

তাই, বর্তমান সময়ে ওয়েব ডেভেলপারদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওয়েবসাইটের রেসপনসিভ ডিজাইন। প্রায় প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটে এখন চার ধরনের লুক দিতে হচ্ছে। ডেক্সটপ বা ল্যাপটপ থেকে দেখলে এক রকম দেখাবে, মোবাইল বা ট্যাব থেকে আরেক রকম। এভাবে ডিভাইস অনুযায়ী সাইটটা নিজেকে এডাপ্ট করে নিবে। অনেক ডেভেলপার ভাবেন যে বুটস্ট্রাপ বা যেকোনো একটা রেসপনসিভ ডিজাইন ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলেই সাইট রেসপনসিভ হয়ে গেলো। সব ক্ষেত্রে এটা সত্যি নয়। এখানে অনেক ধরনের কাস্টমাইজেশন এর প্রয়োজন আছে। এই জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ ডেভেলপার দিয়ে সাইট বানানো প্রয়োজন।

আমাদের দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান আজ থেকে পাঁচ বছরে আগে ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলে রেখেছে, পরবর্তীতে কোন ধরনের আপগ্রেড করেনি। এই সমস্ত ওয়েবসাইটের বেশিরভাগই মোবাইল থেকে ব্রাউজ করার উপযোগী নয়! নতুন যারা ওয়েবসাইট বানাতে যাচ্ছেন, তারাও বোঝেন না ওয়েবসাইট রেসপনসিভ হওয়ার গুরুত্ব কতখানি। ফলে ওয়েবসাইটের মূল যে বেনিফিট তা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।

২. টার্গেট অডিয়েন্স ঠিক না করা

অনেক ওয়েব ডেভেলপার সাইট ডিজাইন করার সময় একটা বিরাট বড় ভুল করেন। তারা নিজেদের চিন্তা ভাবনার আলোকে সাইটের ডিজাইন রেডি করেন। কিন্তু তারা এটা চিন্তা করেন না যে সাইটের ভিজিটর হবে কারা এবং তারা কি ধরনের সাইট ব্রাউজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। যে ব্যক্তি ওয়েবসাইট বানাচ্ছেন ডেভেলপারকে দিয়ে, সে নিজেও অনেক ক্ষেত্রে নিশ্চিত থাকে না যে সাইটটা মূলত বানানো হচ্ছে কার জন্য? ফলে দেখা যায় যে অনেক সুন্দর একটা ওয়েবসাইটও টার্গেট ভিজিটরদের আকর্ষিত করতে ব্যর্থ হয়।

একজন ওয়েব ডেভেলপারকে সাইট ডিজাইন করার সময় অবশ্যই ব্যাকগ্রাউন্ড এনালাইসিস করতে হবে। অর্থাৎ সাইটের মূল ভিজিটর কারা হবে, তাদের পছন্দ কেমন এমন কি ধরনের সাইট তারা ব্রাউজ করে সন্তুষ্ট হবে? আপনার সাইটের মূল ভিজিটর যদি হয় চল্লিশোর্ধ বয়সী মানুষজন আর আপনি সাইটে যদি খুব বেশি কালারফুল ডিজাইন-গ্রাফিকাল এলিমেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করেন- তাহলে সাইটটা ভিজিটরদের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ হবে। অনেক ক্ষেত্রে আপনি ক্লায়েন্ট হারাতে পারেন। কারণ এইসব ক্ষেত্রে ভিজিটররা চায় একটু ফর্মাল এপ্রোচের এলিগেন্ট ডিজাইনের সাইট। আবার ধরুন, আপনি বিক্রি করেন ইলেক্টনিক্স সামগ্রী কিন্তু আপনার ওয়েবসাইট ফুল লতাপাতার ডিজাইনে ভরা, সেক্ষেত্রেও ভিজিটররা বিরক্ত হতে পারে!

বর্তমান সময়ে তাই ইউএক্স/ইউআই ডিজাইনকে অনেক গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। একজন ওয়েব ডেভেলপার এর উচিত ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এ হাত দেওয়ার আগে ক্লায়েন্ট এর বিজনেস সম্পর্কে ভালো করে জানা, সাইটের ভিজিটর এনালাইসিস করা এবং সেই সাথে ক্লায়েন্ট এর সার্ভিস বা প্রডাক্ট এর টোনটা সঠিকভাবে স্টাবলিশ করা।

৩. ব্যাড নেভিগেশন

একটা ওয়েবসাইটের ভালো ইউএক্স ডিজাইনের অন্যতম কম্পোনেন্ট হচ্ছে সাইটের নেভিগেশন প্রসেস। যে ওয়েবসাইটের নেভিগেশন সিস্টেম খুব স্মুথ এবং ফাস্ট, সে ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে ভিজিটররা সন্তুষ্ট হন। কিন্তু সাইটে স্ক্রল করে নামার সময় যদি সাইটটা আটকে আটকে যায় বা অনেক সময় লাগে, সেক্ষেত্রে ভিজিটররা বিরক্ত হতে পারেন। তাছাড়া ওয়েবসাইটের কোথায় কি আছে এটাও নেভিগেশনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভিজিটর যদি ব্রাউজ করার পর না বুঝতে পারেন সাইটে ঠিক কতটি পেইজ আছে, কোন ইনফরমেশনের জন্য কোন পেইজে যাব, তাহলে সাইট বানানোর মূল উদ্দেশ্যটাই ব্যহত হবে!

বাংলাদেশি অধিকাংশ ওয়েবসাইটে এই সমস্যাটা লক্ষণীয়। বিশেষ করে কয়েক বছর আগে বানানো যে সমস্ত ওয়েবসাইট গুলো আছে তাতে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এক সময় ডেভেলপাররা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করার সময় সাইটের নেভিগেশনকে খুব একটা গুরুত্ব দিতেন না, বা বড় কোন সমস্যা বলে ভাবতেন না। কারণ সে সময় ইন্টারনেট স্পিড অনেক কম ছিল, ফলে এমনিতেই যেকোনো সাইট ব্রাউজ করতে একটু সময় লেগে যেতো। আর ইন্টারনেট ইউজাররাও খুব একটা দক্ষ ছিলেন না সাইট ব্রাউজিং এর ক্ষেত্রে। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেট স্পিড বেড়েছে। বিদেশি সাইটগুলো ব্রাউজ করলে দেখা যায় খুব ফাস্ট লোড হয়, স্মুথ ভাবে ব্রাউজ করা যায়। তাই, তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের সাইটগুলোতেও এখন সুন্দর নেভিগেশন প্রসেস তৈরি করাটা বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে। শুধু ভিজিটরদের এক্সপেরিয়েন্স এর জন্যে নয়, গুগলের লেটেস্ট অ্যালগরিদম আপডেট অনুযায়ী এখন সাইটের ইন্ডেক্সের ক্ষেত্রেও নেভিগেশন সিস্টেম অনেক গুরুত্বপূর্ন।

এই জন্য ওয়েবসাইট বানানোর পূরেই এর সাইটম্যাপটা ভালোভাবে ডিজাইন করে নেওয়া প্রয়োজন। তারপর সেই অনুযায়ী ওয়েবসাইটের স্ট্রাকচার রেডি করতে হবে। এরপর সাইটের স্ট্রাকচার এর সাথে ফিট করে এমন দেখে ব্রিডকাম্ব নেভিগেশন সিস্টেম দাঁড় করানো লাগবে। সর্বোপরি, একজন দক্ষ ডেভেলপার এর সাহায্যে সাইট বানানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ন।

৪. ব্রোকেন লিংকস

রেসপনসিভ ডিজাইন, নেভিগেশন, টার্গেট অডিয়েন্স ঠিক রাখা এই সব নিয়ে যে সমস্ত ডেভেলপার চিন্তায় থাকেন, তারা আরও একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় ভুলে যান। তা হচ্ছে- সাইটে ব্রোকেন লিংক থাকা। অর্থাৎ সাইটে কোন লিংকে ক্লিক করার পর পেইজটি পাওয়া যায়না। এই সমস্যাটা অনেক হাই কোয়ালিটি ওয়েবসাইটেও দেখে থাকি আমরা।

ব্রোকেন লিংকগুলো (404) ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় একজন ইউজার এর জন্য সবচেয়ে হতাশাজনক একটি বিষয়। আপনি দেখছেন যে সাইটে কোন একটা লিংকে আপনার জন্য ভ্যালুয়েবল ইনফরমেশন আছে, কিন্তু ক্লিক করার পর ইনফরমেশন এর বদলে পাচ্ছেন একটা ইরর মেসেজ। নিঃসন্দেহে খুব বিরক্ত হবেন আপনি, তাই না?

ব্রোকেন লিংক গুলো ওয়েবসাইটে কেন থাকে? আসলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে সাইটে বেশ কিছু ব্রোকেন লিংক ছড়িয়ে যায়। ধরুন, আপনি সাইটের ইউআরএল স্ট্রাকচার ঠিক না করেই সাইটের সমস্ত বাটন এবং বিভিন্ন সেকশনগুলোতে ইন্টারনাল লিংকিং করে ফেলেছেন। তারপর সাইটের ইউআরএল স্ট্রাকচার চেঞ্জ করেছেন। ফলে ইন্টার্নাল যে সব লিংকগুলো সাইটে ছিল সবই ব্রোকেন লিংক হয়ে যাবে। এমতাবস্থায়, আপনি যদি ঠিকমতো সব লিংক চেক না করেই সাইট লাইভ করে দেন, তাহলে ইউজারদের জন্য ব্যাপারটা মারাত্মক পেইনফুল হতে পারে।

আবার অনেক সময় দ্যাখ যায় ডেভেলপার সাইট বানানোর পর একটা ডেমো হিসেবে লাইভ করে ক্লায়েন্টকে দেখায়। তারপর তারা সাইটটা লাইভে নিয়ে যায়। ফলে ইন্টারনাল লিংকগুলোতে ডেমো সাইটের লিংক থেকে যায়। পরিবর্তিত ডেভেলপার সেই ডেমো সাইট সরিয়ে ফেললে, ভিজিটররা লিংকে ক্লিক করলে “পেইজ নট ফাউন্ড” চলে আসে। এইসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছ- ব্রোকেন লিংক খুঁজে বের করার একটা ভালো টুল ব্যবহার করা। তবে এসব ক্ষেত্রে সহজ সমাধানে না গিয়ে সাইট লাইভ করার আগে ধৈর্য ধরে ম্যানুয়ালি পরীক্ষা করা।

৫. স্লো লোডিং

একটা ওয়েবসাইটের সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার হচ্ছে লোড হতে অনেক টাইম নেওয়া। অনলাইনে মানুষ সব কিছু চায় ফাস্ট। আপনি যখন একটা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে গিয়ে দেখবেন যে সাইটটা লোড হতে অনেক বেশি সময় নিচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই আপনি বিরক্ত হবেন এবং অনেক সময় ওয়েবসাইট সাইট লোড হওয়ার জন্য অপেক্ষা না করেই বেরিয়ে যাবেন। খুব কম ভিজিটরই ধৈর্য ধরে বসে থাকবে সাইট লোড হওয়ার জন্য। স্বভাবতই, যে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ভালো না তা অনেক ভিজিটর হারায়।

যে ওয়েবসাইট লোডিং টাইম অনেক বেশি হওয়াটা দুর্বল ওয়েবসাইটের লক্ষণ। অনেকেই মনে করেন যে শুধু ইমেজ এবং টেক্সট ব্যবহার করা হয় যে সব সাইটে, সেগুলোর স্পিড নিয়ে কোন সমস্যা থাকে না। এটা একটা ভুল ধারণা। সাইটের পেইজ স্পিড খুবই সেনসিটিভ একটা বিষয়। সাইটের কোডিং স্ট্রাকচার ও ইমেজগুলো ঠিকমতো কমপ্রেসড করা না থাকলে সাইট পরিণত হয় ডিজিটাল কচ্ছপে এবং অনেক সময় লেগে যায় লোড হতে। নোভিস ডেভেলপাররা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইন করতে গিয়ে এই সমস্যায় প্রায়ই পড়েন।

সাইটের লোডিং স্পিড বাড়ানোর জন্য অসংখ্য উপায় রয়েছে। কিন্তু কোন উপায় কোন সাইটের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করবে বোঝা মুশকিল। অনেকেই ইন্টারনেটে পাওয়া বিভিন্ন হেল্প আর্টিকেল দেখে সাইটের লোড টাইম কমাতে গিয়ে উল্টো বারোটা বাজান। দেখা যায় সাইট লোড টাইম আরও বেড়ে যায়, কোন কোন ডিভাইস থেকে লোডই হয় না অথবা ডাটাবেজ কানেকশন ইরর ধরা পড়ে। তাই বিচক্ষণতার সাথে এটা হ্যান্ডেল করতে হয়। আরও একটি বিষয় হচ্ছে- একবার একটা ফাস্ট লোডিং সাইট বানিয়ে ফেলেছেন মানে এই না যে আজীবন সাইটের স্পিড ভালো থাকবে। পরবর্তীতে নানান কারনে সাইটের লোডিং টাইম বেড়ে যেতে পারে। তাই নিয়মিত ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম মনিটর করতে হবে।

৬. ওয়েবসাইটটি এসইও ফ্রেন্ডলি না হওয়া

একটা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বানানোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সাইটে ভিজিটর আনা এবং তাদের কাছে নিজের প্রতিষ্ঠানের ইনফরমেশন সরবরাহ করা। আর যদি ওয়েবসাইটটি হয় একটি ব্লগ বা নিউজ পোর্টাল হয়, তাহলে তো ভিজিটররাই সাইটের জান-প্রান ! আর ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর জন্য সাইটটা সার্চ ইঞ্জিনের অপটিমাইজেশন বা এসইও করা আবশ্যক। আর সাইটের এসইও করতে হলে অবশ্যই সাইটটি এসইও ফ্রেন্ডলি হওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের দেশের ম্যাক্সিমাম ওয়েব ডেভেলপার এসইও সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখেন না। তারা খুব সুন্দর ডিজাইনের হাই কোয়ালিটি সাইট বানাতে পারেন ঠিকই, কিন্তু এসইও এনালাইসিস করলে দেখা যায় সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি না হওয়ার কারণে সেই সাইটে পর্যাপ্ত ভিজিটর আসে না এবং সাইটের মূল উদ্দেশ্যই ব্যহত হয়!

মনে রাখবেন, আপনার যেমন ওয়েবসাইট আছে, ঠিক তেমনি আপনার কম্পিটিটরদেরও ওয়েবসাইট আছে। একজন ভিজিটর গুগলে যখন সার্চ করবে সে সরাসরি আপনার কোম্পানির নাম লিখে সার্চ করবে না, সার্চ করবে আপনার পণ্য বা সার্ভিসের নাম লিখে। ধরুন, আপনার কোম্পানির নাম xyz services আর আপনি মূলত ক্লায়েন্টদের লিগ্যাল সাপোর্ট দিয়ে থাকেন। এখন একজন সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট যার লিগ্যাল সাপোর্ট দরকার, সে গুগলে সার্চ করার সময় xyz services লিখবে না, কারণ সে তো জানে না যে আপনি এই সার্ভিস দিয়ে থাকেন। সে সার্চ করার সময় লিখবে legal services in Bangladesh অথবয়া legal service provider in Bangladesh. তাই, ঐ ক্লায়েন্টের সামনে যাওয়ার জন্য আপনার ওয়েবসাইটটিকে এই দুইটি কিওয়ার্ড এ গুগলের টপ সার্চ রেজাল্টের মধ্যে আসতে হবে। আপনার সাইটের বদলে যদি কম্পিটিটরদের সাইট উপরে চলে আসে তাহলে আপনি অনেক সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট হারাবেন।

এই জন্য আপনার ওয়েবসাইটটি এসইও ফ্রেন্ডলি হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এখনও এসইও নাও করান, ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই করাবেন। ওয়েব সাইট যতো সুন্দর হোক নাহ কেন, এসইও ফ্রেন্ডলি না হলে আপনার পক্ষে অনেক কষ্ট হয়ে যাবে সেই ওয়েবসাইট এর র‍্যাংক বাড়ানো। এই জন্য আপনাকে এখনই খেয়াল রাখতে হবে যেন সাইটটা সব দিক থেকে এসইও ফ্রেন্ডলি থাকে। ফলে সাইট সহজে গুগলে ইনডেক্স হবে এবং সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। তাই আপনার উচিত এমন একজন ওয়েব ডেভেলপার কে দিয়ে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করানো যার এসইও সম্পর্কে ব্যবহারিক জ্ঞান আছে।

এই ৬টি সমস্যার সমাধান কি হতে পারে?

আপনি যদি আর্টিকেলটির এই পর্যায় পর্যন্ত এসে থাকেন, তাহলে ধরে নিচ্ছি আপনি আপনার ওয়েবসাইট নিয়ে উপরের এই ছয়টি সমস্যার এক বা একাধিক সমস্যা ইতিমধ্যে ফেস করেছেন অথবা ভবিষ্যতে ফেস করতে পারেন ভেবে চিন্তিত আছেন। স্বভাবতই আপনার মনে প্রশ্ন আসছে- এই সব সমস্যার সমাধান কি?

সমাধানটা আমি আসলে আগেই বলে দিয়েছি। তা হচ্ছে- একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ওয়েব ডেভেলপার এর শরণাপন্ন হওয়া। অনেকেই ভেবে থাকেন যে- দক্ষ ওয়েব ডেভেলপাররা একটু বেশি এক্সপেন্সিভ হয়, তাই কিছু খরচ বাঁচাতে তারা নোভিস ডেভেলপারদের দিয়ে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করান। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত! একটি ওয়েল রেপুটেড ডিজিটাল এজেন্সি আপনাকে এই ক্ষেত্রে যে সাপোর্ট দিতে পারবে, তা অন্যেরা কখনও পারবে না!

আপনি যদি এই প্রথমবারের মতো সাইট বানিয়ে থাকেন, তাহলে বলবো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত উপরের সমস্যাগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখার চেষ্টা করুন। যে ডেভেলপার দিয়ে সাইট বানাচ্ছেন, তার সাথে ভাল করে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সে এই সমস্যা গুলো সম্পর্কে জানে কি না এবং অতীতে সে যে সাইটগুলো বানিয়েছে তাতে এই সমস্যা ছিলো কি না!

গিকি সোশ্যাল বর্তমান সময়ের একটি লিডিং ডিজিটাল এজেন্সি। আমরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু বড় বড় কোম্পানির ওয়েবসাইট বানিয়েছি এবং সাইটগুলোর মেইন্টেনেন্স এর কাজ করে চলেছি। আমাদের টেক টিম সব সময়ে লেটেস্ট টেকনোলজি সম্পর্কে অবগত থাকে এবং নতুন কোন আপডেট আসলেই তা এডাপ্ট করার চেষ্টা করে। ফলে জটিল ধরনের যেকোনো ওয়েবসাইট বানানোর চ্যালেঞ্জও তারা হাসি মুখে গ্রহণ করে। আমাদের মূল মন্ত্র হচ্ছে- ক্লায়েন্টদের ওয়েব বেজড সমস্যার সমাধান করা, সমস্যা সৃষ্টি করা নয়! আপনি কি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আপনার মাথা ব্যথা দূর করতে ইচ্ছুক। তাহলে আজই আমাদের সাথে আজই যোগাযোগ করুণ

GEEKY Social Limited
Mob: 01912-337754, 01677-088348
Email: contact@geekysocial.com
Address: House # 62 (5th floor), Road # 3, Block-B, Niketon, Gulshan – 1, Dhaka – 1212

Related Articles

Join Our Newsletter
Stay up-to-date with latest media insights and updates